এখনও কিসের এত ভয় নরেন্দ্র মোদীর? কাশ্মীরকে প্রাচ্যের সিরিয়া বানিয়েও কি তার পার্টির শান্তি হয়নি? নাকি যুদ্ধ জিগিরের আরও কিছু ধামাকা এখনও বাকি আছে? 

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা সহ অন্যান্য ভারতপন্থী দলগুলির প্রধানরা প্রশ্ন তুলছেঃ যদি লোকসভা ভোট হতে পারে কাশ্মীরে তাহলে বিধানসভা নয় কেন? এমনিতেই কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পূর্নভাবে বিপন্ন। এই মুহূর্তে ভারত-পাকিস্তান কোনো দেশই গণভোট-এর মাধ্যমে সেখানকার মানুষের সিদ্ধান্তের তথা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রদানের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ন পরিবেশ সৃষ্টিতে উদ্যোগী নয়। অন্যদিকে আফস্পার দ্বারা বলিয়ান সেনা বাহিনীর অত্যাচারের ফলস্বরূপ স্থানীয় ছেলেরা যোগ দিচ্ছে সন্ত্রাসবাদী দলে।

মেহবুবা মুফতীর সরকারকে ফেলে দিয়ে এখন বিজেপি কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসন মারফৎ রাষ্ট্রীয় দমন পীড়ন জারী রেখেছে। পুনরায় নির্বাচনের দ্বারা কাশ্মীরের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কোনো রকম হেলদোল নেই কেন্দ্র সরকারের।

১৯৫০ সালে গণভোটের দাবীতে ভারত ও পাকিস্তান সর্মথন করলেও,বাগদাদ চুক্তিতে পাকিস্তান স্বাক্ষর করার অজুহাতে ভারত গণভোটের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। ১৯৯৫ সালে কাশ্মীরে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্যোগে গণভোট আয়োজন করা হলে ৭২% ভোটদাতাই ভারত ও পাকিস্তানকে বর্জন করে পৃথক রাষ্ট্রের দাবীকে সমর্থন করে। কিন্তু সিদ্ধান্তে উভয় দেশই আমল দেয়নি। সেই থেকে চলছে কাশ্মীরের আন্দোলন।

১৯৪৭ হোক অথবা ১৯৬৫ ও ১৯৭১-এর যুদ্ধের পরেও কিংবা সমকালীন যুদ্ধ জিগিরের পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীরকে নিয়ে সমাধান সূত্র বার করতে পারেনি। উভয় দেশই রাষ্ট্রপুঞ্জে তোপ দাগা দাগিতে ব্যস্ত। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নম্বর ধারায় যেখানে কাশ্মীরকে বিশেষ কিছু রাজনৈতিক অধিকার দেওয়া হয়েছে তাকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে মোদী সরকার; এক কথায় তুলে দিতে চাইছে।

কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করে কেন্দ্র সরকারের কি লাভ? কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা ভোট বাড়ানোর এক অমূল্য উপাদান। তাই এই যুদ্ধ জিগির বজায় রাখা। বিধানসভা ভোট না করানো। সমস্তটাই ক্ষমতার বলপূর্বক বহিঃপ্রকাশ।

মোদী সাহেব, আপনার ৫৬ ইঞ্চি ছাতির কলিজায় এইটুকু সাহসের পরিচয় দিয়ে কাশ্মীরের গণভোটের আয়োজনটা করে ফেলুন না! আর্মি নিয়ে ব্র্যান্ডিং, যুদ্ধ নিয়ে খেলা তো অনেক হলো…

 

Photo Courtesy: washingtonpost.com 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *