নয়াউদারবাদী অর্থনীতির সংকটের মেঘ যে গোটা বিশ্বের আকাশে ঘনীভূত হতে শুরু করেছে তা হালের জি-২০ বৈঠক থেকেই স্পষ্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের বাণিজ্যিক যুদ্ধের সুর চড়েছে সপ্তমে। বিশ্বের অর্থনীতির সংকট এবং সেই সঙ্গে দ্বিতীয়বার কেন্দ্রে বিজেপির সরকার গঠন ভারতে ফ্যাসিবাদের উত্থানের পথকে যে প্রশস্ত করছে তা মোদি সরকারের একের পর এক পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে। শ্রম আইনকে পঙ্গু করে দেওয়া, মানবাধিকার আইনের সংশোধন, ৩৭০ ও ৩৫(ক) ধারা বাতিল এবং তৎসহ জম্মু-কাশ্মীরের বিভক্তিকরণ বিজেপির ফ্যাসিবাদী নির্মাণের দিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে। তারই এক উৎকৃষ্ট সংযোজন তথ্য জানার অধিকার আইনের সংশোধন (RTI Amendment Act 2019)। সংশোধিত ধারা সংযুক্তিকরণ থেকে আইন প্রণয়নের পদ্ধতি, সর্বত্রই রীতিমতো জোরপূর্বক গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহকে অবলুপ্ত করার নজির গড়েছে কেন্দ্র সরকার।
তথ্যের স্বাধীনতা আইনের জায়গায় মনমোহন সিংহের আমলে ২০০৫-এ তথ্য জানার অধিকার আইন পাশ হয়। তথ্য জানার অধিকার আইন এবং সেই সংক্রান্ত গভর্ণিং বডিগুলির দাবিদাওয়া মানুষের দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়ার ফল। তথ্য জানার অধিকার আইনের সুবাদে কেন্দ্র সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকারের অনেকবারই হাটে হাঁড়ি ভেঙেছে। ২০১৪-তে এনডিএ সরকারে আসার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে যে তথ্য বেরিয়ে আসে তা বিজেপির অস্বস্তিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। মোদি সরকারের একের পর এক বেড়াল ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ায় তথ্য জানার অধিকার আইনে কোপ কিছুটা প্রত্যাশিতই ছিল। চলতি বছরের ২২শে জুন লোকসভায় সংশোধন বিলটি পেশ করা হয় এবং ২১৮-৭৯ ভোটে বিলটি পাশ হয়। এরপর বিলটি ২৫শে জুন রাজ্যসভায় পেশ হয় এবং ১১৭-৭৫ ভোটে পাশ হয়।

তথ্য জানার অধিকার আইনের সংশোধন হবে এই মর্মে কোনোরকম বিজ্ঞপ্তি আগে থেকে জারি না করে ১৯শে জুন সরাসরি লোকসভায় কেন্দ্রের তরফ থেকে বিলটি প্রথম পেশ করা হয় যা সংবিধানের ৪(১)(সি) ধারাকে সম্পূর্ণ উলঙ্ঘন করে যেখানে বলা হয়েছে দেশবাসীকে সরাসরি প্রভাবিত করবে এমন বিল আনার আগেই সে সম্মন্ধে তথ্যাদি আগে থেকে সরকারের তরফে প্রকাশ করতে হবে। যদিও বিরোধীদের বিক্ষোভের ফলে তা নিয়ে আর প্রক্রিয়াকরণ হয়নি সেদিন। অতঃপর ২২ শে জুলাই মাত্র ২৯৭ জন সাংসদের উপস্থিতিতে লোকসভায় বিল পাশের প্রক্রিয়া চলে। একে তো মাত্র ৫৪ শতাংশ সাংসদের উপস্থিতিতে পাশ করানো হয় সংশোধনী বিলটি, তার ওপর বিরোধী সাংসদের হাত থেকে রসিদ ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। অর্থাৎ, সাংসদ ভবনের অভ্যন্তরেও গণতন্ত্র যে কতটা অসহায় তা আরও একবার দেশবাসী খোলা চোখে দেখল। রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করা হলে সংশোধনের জন্য কমিটি গঠনের দাবীতে কংগ্রেস, রাষ্ট্রীয় জনতা দল-সহ অন্যান্য বিরোধী দলের সদস্যরা ওয়াক-আউট করে। বিরোধীদের দাবীকে কোনোরকম আমল না দিয়ে বিল পাশের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া হয়। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিগুলিই যখন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহরা কার্যত একটি প্রহসনে পরিণত করেছেন তখন এসবের ধারপাশ দিয়েও যে ভারতীয় জনতা পার্টি যাবে না তা একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়।
এ তো গেল বিল পাশ সংক্রান্ত অস্বচ্ছতা। তথ্য জানার অধিকার আইনে যে সমস্ত পরিবর্তনগুলি আনা হয়েছে তা সমগ্র দেশবাসীর গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করার ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারের এক মোক্ষম অস্ত্র। সংশোধনের নামে কার্যত শিরচ্ছেদ করা হয়েছে তথ্য কমিশনের মতো একটি স্বাধীন বিভাগের কার্যকলাপকে। ইতিপূর্বে তথ্য কমিশন কোনোভাবেই কোনো সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য ছিল না। কিন্তু এই আইনের নতুন সংস্করণের মাধ্যমে আসলে তথ্য কমিশন ও কমিশনারদেরকে সরকারের তল্পিবাহক বানানোর কাজটাই করেছে মোদি সরকার।
অবশ্য এই প্রথম বার নয়, এর আগেও ২০১৮ সালের গ্রীষ্মকালীন অধিবেশনে তথ্য অধিকার আইনের সংশোধনের বিল প্রস্তাবিত হয় সরকারের তরফ থেকে, কিন্তু ব্যাপক বিরোধিতার ফলে তা খারিজ হয় লোকসভায়। ২০১৯-এ লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবার পর ক্ষমতায় এসেই কার্যত প্রতিটি স্বাধীন সংস্থাকে সরকারী নিয়ন্ত্রণের শিকলে বেঁধে ফেলতে উদ্যত হয়ে উঠেছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। আর সেই উদ্দেশ্যেই সংসদের অধিবেশনকে ১০ দিন বর্ধিত করে একের পর এক স্বৈরাচারী বিল পাশ করানোর কাজে উদ্যত মোদি-শাহ জুটি। এর মধ্যে তথ্য অধিকার আইন সংশোধন বিল অন্যতম প্রধান।
মানবাধিকার কর্মীদের, মূলত অরুণা রায়ের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় ২০০৫ সালে তথ্য অধিকার আইন পাশ হয় এবং ঐ বছরই ২২শে অক্টোবর তা লাগু হয়। এই আইনে বলা হয় যে, যে কোনো ভারতীয় নাগরিক যে কোনো রকম সরকারী তথ্য জানার জন্য আবেদন করলে তথ্য কমিশন (Information Commission) অনিবার্যভাবে সেই তথ্য প্রদানের ব্যবস্থা করবে ও প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তথ্য প্রদানে বাধ্য করবে।
একজন CIC (Chief Information Commissioner) ও একজন SCIC (State Chief Information Commissioner)-এর তত্ত্বাবধানে ১১জন IC (Information Comissioner) ও SIC (State Information Commissioner) যথাক্রমে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য তথ্য কমিশনের কার্যপরিচালনা করেন। তাদের নিযুক্তিকরণের প্রক্রিয়া, বেতন ও শর্তাবলী বিধিবদ্ধ থাকার ফলে এই তথ্য কমিশন ও কমিশনাররা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারত। ২০১৮-র ব্যর্থ এবং ২০১৯-এর সফল প্রচেষ্টার মাধ্যমে তথ্য অধিকার আইনের যে সংশোধন পাশ করানো হল, তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে মূলত ৬ নং ও ১২ নং ধারায়। এতে বলা হয় যে রাজ্য ও কেন্দ্রের মুখ্য তথ্য কমিশনার (CIC) এবং অন্যান্য সকল তথ্য কমিশনারদের (IC) নিযুক্তিকরণ, বেতন এবং মেয়াদ সম্পূর্নভাবে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে। এই সংশোধনের মাধ্যমে কমিশনারদের চাকরীর স্থানিক স্থায়ীত্ব ৫ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত পরিবর্তন করার অধিকারও রাখা হয়েছে সরকারের হাতে।
ভারতের প্রথম মুখ্য তথ্য কমিশনার ওয়াজাহাদ হাবিবুল্লা বলেন, সংসদ তথ্য জানার অধিকার আইন পাশের সময় এটা নির্ধারিত করেছিল যে, তথ্য কমিশনারদের বেতন, মেয়াদ ইত্যাদি সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত থাকবে তথ্য জানার অধিকার আইনের মধ্যেই। এই ধরনের ব্যবস্থা চালু করার মূল উদ্দেশ্যই ছিল তথ্য কমিশন যাতে একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভীতিহীনভাবে কাজ করতে পারে। কারণ দশের মধ্যে ৯ টি অ্যাপিলেই সরকার জড়িত থাকে।
আইনের স্বতন্ত্রতা ও স্বাধীনতাকে মজবুত করার মতো ফাঁপা বুলি দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার, বিজু জনতা দল, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে বিল পাশ করিয়ে নিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং অবশ্য এই সংশোধনীর হয়ে সাফাই দিয়ে বলেছেন, সেলফ এটেস্টেশন, নীচুতলার সরকারী চাকরিতে ইন্টারভিউ বিলোপের মতই এটা নাকি সরকারের নাগরিক-ক্ষমতায়নের আরো একটি মাইলস্টোন। কিন্তু একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন বিভাগকে সম্পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণের আওতায় নিয়ে আসার অর্থ যে তাকে কার্যত ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের স্বার্থরক্ষায় হাতের পুতুলে পরিণত করা, তা বোঝা খুব একটা কঠিন নয়। পুলিশ-প্রশাসনের মতো তথ্য কমিশনও রাষ্ট্রের তাঁবেদারে পরিণত হবে এবং যার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি সরকারকে প্রশ্ন করার অধিকার হারাবে ভারতীয়রা। তথ্য অধিকার আইনকে সংশোধন মোদি সরকার চাইছে তাকে একটি জীবন্ত শবদেহে পরিণত করতে। একের পর এক স্বৈরাচারী, জনগণের অধিকারকে পিষে মারার বিল প্রস্তত আছে মোদি-শাহের ঝুলিতে। বিল পাশের ও সংশোধনের এই ধারাকে অব্যহত রাখতেই গ্রীষ্মকালীন অধিবেশনে অধিক ১০ দিনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
তথ্য জানার অধিকার আইনের জন্য অম্বানী-আদানীর মত কর্পোরেটের প্রেমে মশগুল মোদি সরকারের বহু কেচ্ছা সামনে এসেছে। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী সহ অন্যান্য বিজেপি নেতাদের জাল ডিগ্রী থেকে খুন-ধর্ষণের ইতিহাস, সমস্ত কিছুই প্রকাশ্যে এসেছে তথ্য অধিকার আইনের ক্ষমতাবলে। ফলত, ‘ঠোঁটকাটা’ এই আইনের স্বতন্ত্রতা এবং স্বাধীনতা যে ভারতীয় জনতা পার্টির চূড়ান্ত অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠবে, তা খুব স্বাভাবিক। দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে মোদীর ডিগ্রীর খোঁজা, রাফায়েল এবং সম্প্রতি উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ড, পরপর মুখ পোড়া থামাতেই চটজলদি তথ্য জানার অধিকার আইনকে পঙ্গু করে দিল কেন্দ্র-সরকার।
তবে এই সংশোধনের লাভের গুড় শুধু গেরুয়া শিবিরের একার নয়, ক্ষমতায় থাকা প্রতিটি দক্ষিণপন্থী আঞ্চলিক দলই, যাদের একদল বিজেপির পক্ষে আর অন্যদল বিরোধী জোটের শরীক, সকলেই তলে তলে এই আইনের সুবিধা ভোগ করবে। বিল পেশ করার পর ওয়াক আউট করে নিজেদের যতই গঙ্গাস্নাত পবিত্র প্রমাণের চেষ্টাই কয়েকটি বিরোধী দল করুক, তাদের প্রত্যেকের দুর্নীতিতে মণিমাণিক্যখচিত ইতিহাস ভারতীয়দের অজানা নয়। বুঝে নেওয়া প্রয়োজন যে, ওয়াক আউট আদতে একটি কারচুপি, সাধারণ ভোটারদের চোখে স্রেফ ধুলো দেবার নামান্তর। যার মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে পরোক্ষভাবে (বিপক্ষে সমর্থন কমিয়ে) নির্বাচন জিতিয়ে দেওয়া যায় সরকারকে। এভাবেই একদিকে বিজু জনতা দল, ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি সরাসরি সমর্থনের মাধ্যমে এবং কংগ্রেস, তৃণমূল, রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও অন্যান্য ওয়াক আউটকারীরা ‘ইচ্ছাকৃত’ পরোক্ষ সমর্থনের মাধ্যমে নিজেরাই প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারা কতটা ‘স্বচ্ছ’ এবং ‘গণতান্ত্রিক’। এদের কেউই যে কারোর বিরোধী নয়, সকলেই যে শুধু সুবিধা রক্ষার্থে বিরোধিতার নাটক করছে তা বলাই বাহুল্য।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তথ্য কমিশনকে অকেজো করে তুলতে মনযোগী হয়েছিল মোদী সরকার। সেই সুবাদেই ২০১৬ থেকে ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুখ্য তথ্য কমিশনারের অনুপস্থিতিতে মাত্র তিনজন তথ্য কমিশনারকে দিয়ে কাজ চালানো হয়। বারংবার নির্দেশ আসলেও সরকার সংশ্লিষ্ট পদে নিযুক্তকরণের ব্যবস্থা করেনি। অনেক টালবাহানার পর অবশেষে এই বছর ফেব্রুয়ারীতে চাপের মুখে পড়ে ৫ জনকে নিযুক্ত করা হয়। তারপর ৬ মাস যেতে না যেতেই এমন সংশোধন।

লোকসভায় দ্বিতীয়বার জেতার পর থেকে যে গতিবেগে গোটা দেশের গৈরিকীকরণ সম্পূর্ন করার পথে এগোচ্ছে বিজেপি-আরএসএস, তাতে আদিবাসী, দলিত ও প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষের জীবনের অধিকারই প্রশ্নের মুখে। মেহনতি মানুষের পক্ষ নিয়ে সরকারের বিরোধিতা করলেই কখনো পাকিস্তানের চর কখনো শহুরে নকশাল বলে দেগে দিয়ে কথা বলার অধিকারকেই গলা টিপতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। এ এমন এক রাষ্ট্রব্যবস্থা চালু করতে চাইছে তারা, যেখানে সন্দেহ হলেই গ্রেফতার করা যায়। তথ্য অধিকার আইনের সংশোধন করে আসলে বিজেপি সরকার উন্মুক্ত শোষণের পথের কাঁটাকেই সরিয়ে ফেলল। আধার কার্ড, নোটবন্দী, জি এস টি, ইউপিএ সংশোধন, নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন, শিক্ষা আইন সংশোধন, তথ্য অধিকার আইন সংশোধন তালিকা ক্রমেই লম্বা হচ্ছে। বহুত্ববাদ এবং জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার বিনষ্ট করে বিজেপির এককেন্দ্রিক ও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা ক্রমে যেন স্পষ্ট হচ্ছে। ব্যপকতর ও তীব্র গণআন্দোলন তুলে এই প্রবাহকে রুখে দাঁড়ানোই এর প্রতিরোধের একমাত্র উপায়।

তথ্যসূত্রঃ
http://pib.nic.in/newsite/PrintRelease.aspx?relid=192264
https://www.prsindia.org/theprsblog/explainer-right-information-amendment-bill-2019
https://www.indiatoday.in/news-analysis/story/what-makes-rti-amendment-bill-so-controversial-1572596-2019-07-23
https://www.indiatoday.in/india/story/-rti-officer-slams-trs-ysrcp-bjd-for-supporting-rti-amendment-bill-in-parliament-1574132-2019-07-27
https://thewire.in/rights/whos-afraid-of-the-rti-act
https://www.rti.gov.in
https://timesofindia.indiatimes.com/india/learning-with-the-times-what-new-amendments-mean-for-right-to-information-act/articleshow/70415670.cms
https://economictimes.indiatimes.com/news/politics-and-nation/lok-sabha-passes-rti-amen

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *