১
নজরুল কাঠ
শশাঙ্ক পাল
কি আর ভাববো আমরা ! আমাদের তো ড্রয়ার ভর্তি ভোগ বাদ
আর বিছানায় স্পঞ্জ
কি আর লিখবো আমরা ! আমাদের তো শুধু তাল তাল মাংস আর দিন ফুরালে হরিধ্বনি
আর পূর্বপুরুষের কঙ্কাল বেচে পাওয়া কয়েকটা টাকা
প্রতিদিন ভেটকি মাছের চোয়াল নিয়ে আমরা জেগে উঠি আশেপাশে টুকরো টুকরো
পাউরুটির মত পৃথিবীটাকে ভক্ষণ করি
উদারবাদী রাষ্ট্রের বাথরুমে বাংলা সংস্কৃতির টয়লেট পেপার হয়ে ঝোলা আটকাতে পারিনা
মৌলবাদীদের খাল খিঁচে নিতে পারিনা নজরুলের মতো
একশো বছর আগেও মানুষ নিজেকে কান্ডারী ভাবতো
তুরস্কের রক্তাক্ত রাস্তায় তখন স্বাধীনতার পায়রা ওড়াচ্ছে কামাল পাশারা
মেঘের মতো চুল আর চুল্লির মতো বুক নিয়ে এক বিদ্রোহী লিখে ফেললেন কিছু ইস্পাত
বিশ্বযুদ্ধের আগুনে গান হয়ে ঠিকরে বেরিয়ে আসলো মহাকালের রক সংগীত সেই
চিরবিদ্রোহীর ধমনী থেকে
এই ধরণীর ধূলিমাখা অসহায় সন্তানেরা শুনলো আহ্বান
উপড়ে ফেলতে চাইলো রাষ্ট্র
বললো, আমি উন্মাদ ! আমি উন্মাদ !
সর্বহারার মৃৎপাত্র ভরা অভাব আর ক্ষুধা সাঁড়াশির গড়াপেটায় বিদ্রোহী হয়ে উঠলো
সকলে
আকাশে বাতাসে ক্যানেস্তারা পিটিয়ে বিদায় করলো সাম্রাজ্যবাদের ভূত
তারপর সেই আগুনের মাঝখানে কারা কাঁটাতার এনে ফেলেছে সাম্যের গান বদলে গেছে
ঢপের কীর্তনে
বাবুসাবদের মেনে নিয়েছে কুলির দল
সর্বহারাদের পাঁজর দিয়ে বানানো গিটার আর কলম জুটেছে
এখনো গান হয়, এখনো কেউ লিখে ফেলে একাকিত্বের থিম সং
মানুষ গেয়ে ওঠে
“আমাকে আমার মতো থাকতে দাও”
এখনো প্রতিবাদ হয়, কোথায় আবার, সেই চুরুলিয়াতেই
যেখানে প্রথম “কোন ঘর ছাড়া বিবাগীর বাঁশি শুনে উঠেছিলে জাগি ” সেই চির বৈরাগী
বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যায় হিন্দু রাষ্ট্রের লিফলেট
বাবা কাকারা বলে ফেলে
“কিউবায় কাটা রা নেই বলে চে বিপ্লব টা করতে পেরেছিলো”
আমার শুধু বলার, হে পথিক বাঙালি তোমার বিরুদ্ধে হাজার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করো
ওরা বারবার ধ্বংসের কথা বলবে, তুমি সৃষ্টির কথা শুনো
ওরা বলবে “জয় শ্রী রাম” তুমি জানো তোমায় কি বলতে হবে
তার উত্তরে তুমি জোরসে বোলো, “কান্ডারী হুঁশিয়ার”!
বলতে দ্বিধা কোরোনা এবং দ্বিধা কোরোনা !
২
আমি চির বিদ্রোহী বীর
সৌগত দত্ত
প্রতিষ্ঠান ভেঙে একটা প্রাচীর নেমে আসে,
দেবতার বুক বেয়ে হেঁটে যেতে যেতে
প্রাচীর থেকে ইট খসে পড়ে মাঝে মাঝে।
কারার গরাদের মতো জাপটে ধরতে আসা
ভাব
ছিঁড়ে যায় প্রলেতারীয় দম্ভে।
আগুন গিলতে গিলতে গলা পুড়ে যায় কলমের,
জমে ওঠা ছাই ঝেড়ে ফ্যালে
ঐতিহাসিক স্পর্ধা।
শোষণের জঠরে অনুরণিত হয়
“আমি চির বিদ্রোহী বীর”।

