বগটুই একটা পাখির নাম হতে পারতো যার লেজে লাল পালক, কাঁঠাল পাতার রঙে মিশে একটুখানি জমাট স্বপ্নের মত যে পথচারীদের পাট ভাঙা আনন্দ হতে চায়।
বুড়ো শরীফ চাচার গেঞ্জির পকেটে দশ টাকা হয়ে সে যেতে চায় স্টেশনে
তৈমুরের ভ্যানের শেষ প্যাসেঞ্জার হয়ে ফিরতে চায় গ্রামে
ইলেভেনে ওঠা লিলির হাতের স্মার্ট ফোন হয়ে যেতে চায়
আফরুজার সাদিতে সুরমার কালিতে মিশে বলতে চায়, কবুল হে!
গ্রামে পরব এলে উনুনের ধোঁয়াতে মেশা ভুনার খুসবু হয়ে হাসাতে চায় রুপোর ছেলে মেয়েগুলোকে
নির্বাচনের উত্তপ্ত হাওয়ায় বগটুই ফারুকের সবজি ক্ষেতে স্বপ্নের ফলন, নূর নেহারের শাড়ি বিক্রির মুনাফা, জাহানারার সেলাই মেশিনের ঘরঘর শব্দ হতে চায়
বোমা বাজির সন্ধ্যায় ইনসাফ হয়ে দাঁড়াতে চায় কাঁচা রাস্তায়
খুনোখুনির বিকেলে মনসুরার পেটে আসা ছ মাসের শিশু হয়ে যেতে চায়
কিন্তু বগটুই দু কান কাটা রাজনীতির ভাগ বাঁটোয়ারার মহোৎসবের জুলুসে একটা রক্তাক্ত তাজিয়ার নাম
নূরনেহার, জাহানারা আর রুপোর ছেলেমেয়েগুলোর আধ পোড়া শরীরের পোস্টমর্টেমের নাম বগটুই
নেতা ও বুদ্ধিজীবী কুমিরদের শোকসভায় মোমবাতি আর কবিতার বইয়ের নাম, ক্ষতিপূরণের টোপ, তদন্ত কমিটি আর মিডিয়ার তীরে বেঁধা বগটুই, একটা পাখির নাম হতে পারতো
যার ডাকে পৃথিবীতে নেমে আসতে পারতো চিরস্থায়ী শান্তি ও প্রাচুর্যের ভোর
প্রেমের লাল উল্কারা গোলাপ হয়ে ফুটতো ভাতের মতন মুঠো মুঠো
হিংসাকে গ্যাস বেলুন বানিয়ে আঙুলে জড়ানো সুতো ছেড়ে দিতো শিশুরা
অথচ আমাদের ঘর পুড়ছে রোজই
অভাবে অভাবে ঝলসে যাচ্ছে সব
হাহাকার জব্দ হচ্ছে
আমাদের চোখ মোছা গামছা গুলো পাখি হয়ে যাচ্ছেনা বগটুই! সব সৃষ্টির নামে কসম, কথা দাও তুমি পাখি হয়ে এসে একবার ডাকবে!